অপরাধের পদ্ধতি বা 'modus operandi’ বেশ অভিনব। দিনে হকারি, রাতে বাটপাড়ি! সারাদিন ধরে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাইকেলে ঘুরে ঘুরে হকারি, কখনও কুলফি বিক্রেতা হিসাবে, কখনও পুরনো কাপড়ের ক্রেতা, অথবা পাপোশ-বিক্রেতার ছদ্মবেশে। উদ্দেশ্য, বিভিন্ন গয়নার দোকান দিনের বেলা ভাল করে 'রেইকি' বা জরিপ করে নেওয়া, এবং গভীর রাতে গ্যাসকাটার দিয়ে শাটার ভেঙে দোকানের সোনা-রূপো সাফ করে দেওয়া। এভাবেই রাতের অন্ধকারে লুঠপাটের একাধিক ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে ঘটেছিল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া, ভাতার এবং আউশগ্রামে। এবং মুর্শিদাবাদের ভরতপুরেও। খোঁজ চলছিল দুষ্কৃতিদের, চলছিল টহলদারি এবং গোপন সূত্রে খবর সংগ্রহের কাজ। অবশেষে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ৫ জনের দুষ্কৃতিদল। যারা স্থানীয় আদৌ নয়, প্রত্যেকেই উত্তরপ্রদেশের বাদায়ুন বা আউরাইয়া জেলার বাসিন্দা। আন্তঃরাজ্য এই গ্যাং পূর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন অঞ্চলে বাড়ি ভাড়া করে থাকত, নিজেদের পরিচয় দিত ব্যবসায়ী হিসাবে। কারোর যাতে সন্দেহ না হয়, সকাল সকাল তাই কখনও কুলফি, কখনও পুরনো পোশাকআশাক নিয়ে বেরিয়ে পড়ত বাড়ি থেকে। তারপর যা হত, লিখেছি শুরুতেই। ধৃত ৫ জনের থেকে উদ্ধার হয়েছে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪০ রাউন্ড কার্তুজ, প্রায় ২৬ লক্ষ অর্থমূল্যের চোরাই সোনা-রূপো, ১ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা নগদ, ৫ টি সাইকেল, এবং গ্যাসকাটার-লোহার রড-ভারি হাতুড়ি সহ দোকানের শাটার ভাঙ্গার নানান সামগ্রী। ৫ দুষ্কৃতিই আপাতত পুলিশ হেফাজতে। তদন্ত দ্রুত শেষ করে চার্জশিট জমা দেব আমরা, সুনিশ্চিত করব শাস্তি। ছবি রইল দুষ্কৃতিদলের। উদ্ধার হওয়া সামগ্রীরও। অভিনন্দন পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ।